বিশেষ প্রতিনিধি ,রাজশাহী থেকে
সঠিক সময়ে সুদের টাকা দিতে না পাড়ায়, দু’জন ব্যক্তি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আত্মহত্যা দু’টির মুল কারণটি জানার পর, উপজেলার বানেশ্বর এলাকা জুড়ে সুদখোর রফিক হাজীর বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছে। সুদখোর সামান্য কাপড় সেলাইয়ের দর্জি থেকে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার বানেশ্বর বালিয়াঘাটি গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান বাবু। সে বানেশ্বর বাজারের টাইলস,বালাইনাষকের ব্যবসা করত। বাবু বানেশ্বর বাজারের রফিক হাজীর নিকট থেকে ৩ লাখ টাকা চড়া সুদের ওপর নিয়ে ছিল। সঠিক সময়ে সুদের টাকা দিতে না পাড়ায়, উপজেলার বেলপুকুর রেলগেট এলাকায় গত ৬ মার্চ ট্রেনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। দুঘর্টনা স্থলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মৃত বাবু কাগজের চিরকুটের মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে গিয়ে ছিলেন। কিন্তু বেলপুকুর থানা পুলিশ চিরকুটে থাকা নামটি প্রকাশ করেনি। বরং গোপনে থানা পুলিশ মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নিহতে মিজানুর রহমান বাবুর বড় ভাই এছাহক রহমান বলেন, আমার ছোট ভাই বানেশ্বর অগ্রনী ব্যাংকের শাখা থেকে ঋণ করে ছিল। ঋণের সুদের টাকা দেয়ার জন্য, বানেশ্বর বাজারের রফিক হাজীর কাছ থেকে চড়া সুদে ৩ লাখ টাকা নিয়ে ছিলেন, সেটি আমি জানতাম। পরবর্তী সময় আরও টাকা নিয়েছে কী না আমার সেটা জানা নেই। তিন লাখ টাকা নিয়ে, ভাইকে গ্রায় ৭ লাখ টাকা দিতে হয়েছে বলে,আমি শুনেছি। সুদের টাকাই ভাইয়ের কাল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে শহিদুলের এক আত্ময়ী জানায়, শহিদুল প্রায় সময় মাদক দ্রব্য সেবন করে থাকত। সে রফিক হাজীর কাছ থেকে নেশা করা জন্য মাঝেমধ্যে টাকা নিত। এই সুদের টাকা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেয়ে অনেক টাকায় পরিনত হয়। বাজারে শহিদুলের দুই শতাংশ জমি ছিল। বাধ্য হয়ে রফিক হাজীকে জমি টুকু লিখে দিতে হয়ে ছিল। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫০ লাখ টাকা। এই কারণে, শহিদুল ২০১৮ সালে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারা যায়। এলাকাবাসীদের ধারনা নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বানেশ্বর বাজারের একাধিক ব্যক্তিরা জানায়, রফিক হাজী কয়েক বছর আগে সামান্য একজন কাপড় সেলাইয়ের দর্জি ছিল। সুদের ব্যবসা করে সে বাজারের মসজিদ মার্কেটে তার ১৩টি দোকান, আবাসিক হোটেলের ব্যবসা, দুইটি হাইচ মাইক্রোবাস, মুরগির খাবারের দোকান, পুকুরের মাছের ব্যবসাসহ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। সব ব্যবসাই তার লোক দেখানোর জন্য। তার মুল ব্যবসা হলো সুদ। সে একসময় রাজশাহী জেলার চিহ্নিত রাজাকার মৃত আয়েন উদ্দিনের এক সময়ের দোসর ছিল।
এ ব্যাপারে রফিক হাজী বলেন, মিজানুর রহমান বাবু আমার কাছে গত এক বছর আগে দুই লাখ টাকা নিয়ে ছিল। আমি ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে ছিলাম,এসে শুনি বাবু মারা গিয়েছে। আমি শহিদুলের কাছে জমি ক্রয় করিনি। আয়েন উদ্দিনের ছেলের নিকট থেকে জমিটি ক্রয় করেছি। বানেশ্বর বাজারের আ.লীগের অল্প বয়সে ছেলেরা আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে এবং তারা আমাকে হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছে। আমি আয়েন উদ্দিনের কাছে থেকে বেতন নিয়ে আমি আস্তে আস্তে ব্যবসা করে এগুলো ক্রয় করেছি। আমি কোনো দল পাটি করি না। রাজনৈতিকভাবে আমার বিরুদ্ধে গুজোব ছড়ানো হচ্ছে।